কেওনঝর ও তার আশপাশ, ওড়িশা | Keonjhar, Offbeat Odisha Travel Guide

 যখনই পুজোর মধ্যে বিশেষ করে কালীপুজোর আগে বা পরে ট্রেনে কোথাও যাওয়া আসা করি অসম্ভব ভিড় পেয়েছি। এবারও তাই হল। খেয়াল ছিল না এই ভিড়ের ব্যাপারটা! হাওড়া থেকে জাজপুর-কেওনঝর রোড মাত্র ৪-৩০ ঘন্টার জার্নি বলে স্লিপারে টিকিট কেটেছি। এরপর যা হওয়ার তাই হল। জেনারেলকেও হার মানালো স্লিপার, তিলধারণের জায়গা নেই! সারারাত শুধু এই ভেবে জেগে রইলাম যে রাত ৩-৩০ টের সময় নামবো কি করে! সঙ্গে মা, ভাইয়ের ৪ বছরের মেয়েও আছে, ব্যাগপত্তর তো আছেই। এবার ১৩৯ এ ফোন করে সত্যিই বেশ কাজ হল। ওনারা বেশ সহযোগিতা করলেন। বালাসোর পেরিয়ে যাওয়ার পর রেল পুলিশ এসে খোঁজ নিয়ে গেলেন। তারপর আমরা ঠিকমতো স্টেশনে নামতে পেরেছি কিনা দেখার জন্য স্টেশনে ওই মাঝরাতেও রেল পুলিশের একজন দাঁড়িয়ে ছিলেন। আমরা নামার পর আমার সই নিয়ে তবে গেলেন।

$ads={1}

{tocify} $title={Table of Contents}

বকখালি ও ফ্রেজারগঞ্জ ভ্রমণ বৃত্তান্ত 
Keonjhar, Offbeat Odisha Travel Guide

জাজপুর স্টেশন থেকে কেওনঝর পান্থনিবাসের পথে

সে যাইহোক, স্টেশন থেকে বেরিয়ে একটা আর্টিগা গাড়ি ভাড়া করে আমরা ৮ জন কেওনঝর বা কেন্দুঝরের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। রেট ৪,২০০ টাকা। দূরত্ব ১২০ কিমি।  পথে ঘাটগাঁওতে মা তারিণী মন্দির দর্শন করার জন্য কিছুক্ষণ দাঁড়ালাম। এইসময় মন্দিরে আরতি চলছে, বেশ জাঁকজমকপূর্ণ এই আরতি। তারপর সোজা ওড়িশা ট্যুরিজম পান্থনিবাসের দোরগোড়ায়। আগেই অনলাইনে ঘর বুক করে রেখেছিলাম। শহরের বাইরে, হাইওয়ের ধারে বেশ ফাঁকা জায়গায় এই পান্থনিবাস। এখানে ঘর ভাড়ার সাথেই দুজনের জলখাবার ধরা থাকে (complimentary breakfast )। দ্বি-শয্যাবিশিষ্ট ঘরে যদি একজন অতিরিক্ত থাকে তাহলে দিনপ্রতি ৫০০ টাকা বেশি লাগে complimentary breakfast সমেত। 

আজকের দিনটা একটু আরাম করেই কাটাবো ঠিক করেছি। তাই জলখাবার সেরে স্নানে যাই। জলখাবারে পুরী-সবজি, পোহা বা উপমা থাকে। স্নান করে একটু দেরীতেই দুপুরের খাবার সেরে নিই। এখানকার খাবারের মান ও পরিমাণ বেশ ভালো। দামও ঠিকঠাক।

বড়া ঘাগড়া , বড়া ঘাগড়া বাঁধ, সানা ঘাগড়া

আমরা পান্থনিবাসে কথা বলে ১৫০০ টাকায় একটা বোলেরো গাড়ি নিলাম। এই গাড়িতেই বাকি দু-তিনদিন ঘুরবো। যেদিন যেমন ঘুরবো সেদিন সেইভাবে ভাড়া দেবো এটাই ঠিক হলো। আজ বিকেলে আমরা কাছাকাছি ঘুরবো সানা ঘাগড়া , বড়া ঘাগড়া আর বড়া ঘাগড়া বাঁধ। এই জায়গাগুলি ভালো করে ঘুরে দেখতে মোটামুটি সময় লাগে ৩ ঘন্টা। এই জায়গাগুলি আগামীকাল গোনাসিকা, খন্ডধরের সাথেও ঘুরে নেওয়া যায়। সবমিলিয়ে গাড়ি ভাড়া ৩,৭০০ টাকা। কিন্তু আমরা তাড়াহুড়ো না করে ধীরে সুস্থে সময় নিয়ে ঘুরবো বলে আজই এগুলো দেখে নেবো ঠিক করেছি। কারণ সঙ্গে বয়স্ক মা আর বাচ্চা আছে। আজকের দ্রষ্টব্য ছাড়া বাকি সব দর্শনীয় স্থানগুলোই বেশ দূরে দূরে। বড়া ঘাগড়ার দূরত্ব পান্থনিবাস থেকে ৭ কিমি। শেষের পথটুকু জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে। কাছেই বড়া ঘাগড়া বাঁধ। মাছা কান্দানা নদীর ওপর এই বাঁধটি। জলপ্রপাত দুটির জলের উৎসও এই নদীটি। বিকেলবেলা বাঁধের পাশে বাঁধানো রাস্তা দিয়ে হাঁটতে বেশ ভালো লাগে। বাঁধের জলে সূর্যাস্তের দৃশ্যও মনোরম। পান্থনিবাস থেকে সানা ঘাগড়ার দূরত্ব ৩ কিমি। সুন্দর সাজানো একটি পার্কের মধ্যে এই জলপ্রপাত। শহরের মধ্যেই রয়েছে একটি জগন্নাথ মন্দির। ওড়িশা মানে একদিকে যেমন উত্তাল বঙ্গোপসাগর আর জগন্নাথ মন্দির আর একদিকে পাহাড়, জঙ্গল আর ঝর্ণার মেলবন্ধন

গোনাসিকার পথে

আজ দ্বিতীয় দিন। আমরা যাবো গোনাসিকা আর খন্ডধর জলপ্রপাত। গাড়ি ভাড়া ৩,০০০ টাকা। খন্ডধরের দূরত্ব প্রায় ৬০ কিমি। গোনাসিকা পথেই পরবে। গাড়ি ছুটল গ্রামের মধ্যে দিয়ে একটু ভিতরের রাস্তা ধরে। কেওনঝর মূলত খনি এলাকা হলেও এখানে বেশিরভাগ জায়গাতেই রাস্তা খুবই ভালো। এই রাস্তায় এসে যে কেউ মুগ্ধ হবেই। এই পথ দিয়ে ছুটে চলা এই ট্যুরের উপরি পাওনা। যারা নিজেরা গাড়ি বা বাইক নিয়ে ঘুরতে ভালোবাসেন তাদের পক্ষেও অন্যতম আদর্শ জায়গা কেওনঝর। পথে যেতে যেতে পর পর অনেক স্কুল, কলেজ চোখে পড়লো। প্রচুর গাছপালা তো আছেই। দু-দিকে শালের জঙ্গল মাঝখান দিয়ে পথ চলে গেছে। চারদিকে ছড়ানো সবুজ পাহাড়ের সারি। অপূর্ব দৃশ্য!  এক জায়গায় অনেক সরষে ফুল হয়ে আছে দেখে দাঁড়িয়ে পরলাম, কিছুক্ষণ ছবি তুলে আবার গাড়িতে উঠি। পান্থনিবাস থেকে গোনাসিকা প্রায় ৩০ কিমি। গোনাসিকা অর্থাৎ গরুর নাকের সদৃশ। দেখতে অনেকটা গরুর নাকের মতো তাই এমন নাম। এখানে এক জায়গায় গুপ্ত-গঙ্গার দর্শন পাওয়া যায়। নাসিকার ন্যায় একটি পাথরের দুই ছিদ্র পথে বৈতরণী নদীর উৎপত্তিস্থল। তারপর আর নদীর গতিপথ খুঁজে পাওয়া যায় না বলে এটিকে গুপ্তগঙ্গাও বলা হয়। মন্দির বানানো আছে।  ১০ মিনিট সিঁড়ি দিয়ে উঠে যেতে হয়।

দাওয়াইপানি মিনারেল স্প্রিং ভিলেজ

খন্ডধর জলপ্রপাত

গোনাসিকা দর্শন করে এগিয়ে যাই খন্ডধরের দিকে। গ্রামের ঘর-বাড়ি বসতি পেরিয়ে পাহাড় আর জঙ্গলে ঘেরা লাল রাস্তা ধরে এগিয়ে চলি, বেশ কিছুটা দূর থেকেই দেখা যায় সবুজ পাহাড়ের বুক চিরে নেমে আসছে জলের ধারা। হালকা বৃষ্টির মধ্যে সোঁদা মাটির সাথে বুনো গন্ধের মিশ্রণ নাকে আসে। বৃষ্টির জল পেয়ে লাল মাটির রাস্তা আরো লালচে আর গাছপালা আরো ঘন সবুজ হয়ে ওঠে। এখন বর্ষাকাল নাহলেও মাঝে মাঝে হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। বর্ষার সময় জলপ্রপাতের বেগ আরও তীব্র হয়। কেওনঝরের আশেপাশে ও কেওনঝর জুড়ে আছে বেশ কিছু সুন্দর সুন্দর জলপ্রপাত, তাই কেওনঝরকে জলপ্রপাতের শহর ও বলা হয়। রাস্তা ভালো, সবুজের সমারোহ, আর জলপ্রপাতের জন্য বর্ষাকাল বা বর্ষার পরই কেওনঝর বা কেন্দুঝর বেড়ানোর উপযুক্ত সময়। আমরা এসেছি নভেম্বরের শুরুতেই। কালীপুজো, ভাইফোঁটা সব মিটিয়ে। 

কেওনঝর ও তার আশপাশ, ওড়িশা | Keonjhar, Offbeat Odisha Travel Guide

গাড়ি থেকে নেমে বেশ কিছুটা সিঁড়ি ভেঙে উঠে তারপর আবার নামতে হয়। যদিও ছোট ছোট ধাপ। প্রায় ২০০ সিঁড়ি। খন্ডধর জলপ্রপাতকে রেইনবো-ওয়াটারফলস বলে। রোদ্দুর থাকলে জলপ্রপাতের বুকে রামধনু খেলা করে। তবে মেঘলা হলে এই রামধনু বোঝা যাবে না। রোদ্দুরের তেজ বাড়লে রামধনুর রংও আরো গাঢ় হয়। অদ্ভুত সুন্দর এই জলপ্রপাতটি। কিভাবে যে দু-ঘন্টা কেটে গেল বুঝতেই পারলাম না। অনেকে এখানে স্নানও করছে। এদিকে তেমন খাওয়ার জায়গা নেই বলে দুপুরে কিছু খাওয়া হল না। যদিও সকালে ভারি জলখাবার ছিল।

খন্ডধর জলপ্রপাতের আর একটি অংশ আছে সুন্দরগড়ে। এখানে ওড়িশা ইকো ট্যুরিজমের নেচার ক্যাম্পে থাকা যায় জলপ্রপাতের কাছাকাছি। নিকটতম রেলস্টেশন রৌরকেল্লা। আবার কেওনঝর থেকে গাড়িতেও পৌঁছনো যায়। কেওনঝর থেকে প্রায় ৩ ঘন্টা সময় লাগে, দূরত্ব প্রায় ১৩০ কিমি। রৌরকেল্লা থেকে দূরত্ব প্রায় ৮০ কিমি। একই নামের জলপ্রপাত দুদিকে। সেইজন্য আমি এই দুটি খন্ডধরকে একই ভেবে গুলিয়ে ফেলেছিলাম প্রথমে। অনেকেই হয়তো গুলিয়ে ফেলেন।

কেওনঝরে তৃতীয় ও শেষ দিন

তৃতীয়দিনে আমাদের দ্রষ্টব্য ---- সীতাবিঞ্জি, গুন্ডিচাঘাগী জলপ্রপাত, ভীমকুন্ড আর কানঝারি বাঁধ। গাড়ি ভাড়া ৩,৬০০ টাকা। আজই কেওনঝরে আমাদের শেষ দিন। আগামীকাল একই পথে ফেরার পালা। অনেকেই যেদিন জাজপুর পৌঁছন অর্থাৎ ট্যুর শুরুর দিন এই জায়গাগুলি ঘুরে একেবারে সন্ধ্যেবেলা হোটেল পৌঁছন। কিন্তু বেশ হেকটিক বলে আমরা এটা করিনি। সেক্ষেত্রে একদিন কম লাগে। এই জায়গাগুলি ঘুরতে হলে জাজপুরের দিকেই আবার যেতে হয়। কেওনঝর বা কেন্দুঝর ঘুরতে হাতে পুরো দুটো দিন সময় লাগে। 

 হান্ডিভাঙ্গা জলপ্রপাতের রাস্তা ভালো নয় বলে আমরা যাবো না। আর আছে মুর্গ মহাদেব জলপ্রপাত ও কাঞ্জিপানি ঘাঁটি। হান্ডিভাঙ্গা জলপ্রপাত ও মুর্গ মহাদেব জলপ্রপাত বরবিল থেকে কেওনঝর আসার রাস্তায় পরে।

কাঞ্জিপানি ঘাঁটি মূলত ২০ কিমি ব্যাপি জাতীয় সড়ক (ন্যাশনাল হাইওয়ে, NH-49)। রাস্তার  একপাশে সবুজ পাহাড় আর আছে অসংখ্য হেয়ারপিন বেন্ড। বর্ষার সময় এই ঘাট প্রায়শই মেঘে ঢেকে যায়। এই অঞ্চলটিকে ঘাট সেকশনও বলা হয়। 

সীতাবিঞ্জি একটি ঐতিহাসিক তথা পৌরাণিক স্থান

প্রথমেই গেলাম সীতাবিঞ্জি। শহর থেকে দূরত্ব প্রায় ২৫ কিমি। এটি একটি ঐতিহাসিক তথা পৌরাণিক স্থান। বিরাট বিরাট পাথরের চাঁই অদ্ভুতভাবে ব্যালেন্স করে দাঁড়িয়ে আছে। গ্রামের মধ্যেই এক গুহা-মন্দিরে লব-কুশসহ সীতাদেবীর পুজো হয়। কথিত এখানেই লব-কুশের জন্মস্থান। এক জায়গায় লোহার সিঁড়ি দিয়ে উঠে পাথরের গায়ে ছবি (Fresco painting) আছে যদিও তা অস্পষ্ট। ইতিহাস নিয়ে যারা চৰ্চা করছেন তারাই ভালো বুঝতে পারবেন। কাছেই একটি বড় ছাতার মতো পাথর যেটি রাবন -ছায়া বলা হয়।

গুন্ডিচাঘাগী জলপ্রপাত

সীতাবিঞ্জির পর গুন্ডিচাঘাগী জলপ্রপাত। ঘাটগাঁও হয়েই যেতে হয় যেখানে তারাতারিণী মন্দির আছে, কাছেই। জলপ্রপাতটি মুসালা নদীর ওপর অবস্থিত আর বেশ বিস্তৃত। অনেকগুলি ধারায় জল নেমে আসছে পাথরের গা বেয়ে। কেওনঝর শহর থেকে প্রায় ৫৫ কিমি।

ভীমকুন্ড একঘন্টা সময় লাগে

কেওনঝর শহর থেকে ভীমকুন্ড ৬০ কিমি, ময়ূরভঞ্জ জেলায় অবস্থিত। গুন্ডিচাঘাগী থেকে প্রায় ৪৫ কিমি, একঘন্টা সময় লাগে। রাস্তা এদিকে সব জায়গাতেই বেশ ভালো। তাই এত এত জার্নি বোঝা যায় না। বৈতরণী নদীর ওপর ভীমকুন্ড অনেকটা জায়গা জুড়ে অবস্থিত। ওয়াচ-টাওয়ারের ওপর থেকে এর বিস্তৃতি দেখে হতবাক হতে হয়। এখানেই বেশ অনেকক্ষণ সময় কেটে যায় মুগ্ধতা আর বিস্ময়ে।

কানঝারি বাঁধ ব্রাহ্মণী নদীর ওপর এই বাঁধ

আমাদের আজকের শেষ দ্রষ্টব্য কানঝারি বাঁধ। কেওনঝর শহর থেকে ২৪ কিমি দূরে, ব্রাহ্মণী নদীর ওপর এই বাঁধ। ইচ্ছে করেই এটি শেষে রেখেছি সূর্যাস্ত দেখে ফিরব বলে। তবে এখন বৃষ্টি হওয়ায় তা আর হলো না। বেশ সুন্দর আর বড়ো ড্যামটি। আজকে সূর্যাস্তের সাথে শেষ হলো আমাদের এবারের কেওনঝর দর্শন। পাহাড় জঙ্গল আর জলপ্রপাতে মোড়া কেওনঝর তার সাথে অপূর্ব পথের শোভা, গ্রামের রাস্তা, ওড়িশা পর্যটনের আস্তানা সব মিলিয়ে মন কেড়ে নিয়েছে।

Keonjhar, Offbeat Odisha

কখন যাবেন কেওনঝর 

বর্ষাকালে জলপ্রপাতগুলিতে জল বেশি থাকে। বর্ষার পর সেপ্টেম্বর, অক্টোবরও খুব ভালো সময়। আমরা গিয়েছিলাম নভেম্বরের শুরুতে। শীতকালও মনোরম।

কোথায় থাকবেন

কেওনঝর শহরে তথা বাজার এলাকায় বেশ কিছু বেসরকারি হোটেল আছে। একটু ভিতরে ফাঁকায় থাকতে চাইলে ওড়িশা পর্যটনের পান্থনিবাস ভালো। আমাদের ডাবল-বেড ডিলাক্স ঘরের ভাড়া পড়েছিল দিন প্রতি ১৩০০+জিএসটি (gst )। এরমধ্যে দুজনের ব্রেকফাস্ট ধরা ছিল।

পান্থনিবাস বুকিং এর লিংক

https://www.bookodisha.com/

ওড়িশা পর্যটন পান্থনিবাসের ফোন নং :-

9078885525

এছাড়াও ওড়িশা ইকো ট্যুরিজমের সানাঘাগড়া নেচার ক্যাম্পও ভালো আরণ্যক পরিবেশে।

https://www.ecotourodisha.com/

কিভাবে যাবেন কেওনঝর 

যে কোন পুরীগামী ট্রেনে জাজপুর-কেওনঝর রোড নেমে গাড়িতে যাওয়া যায়। বাসও চলে এ পথে। দূরত্ব ১২০ কিমি। বরবিল হয়েও আসা যায়। বরবিল থেকে কেওনঝর ৭০ কিমি। তবে জাজপুরের দিকে ট্রেনের সুবিধা বেশি এবং রাস্তা ভালো বলে আমরা এদিক দিয়েই আসা-যাওয়া করেছি। 

বাবুঘাট থেকে কেওনঝর শহর সরাসরি বাস যাচ্ছে। এসি স্লিপার বাস ভাড়া ৮০০/১০০০ টাকা। এক্ষেত্রে স্টেশন থেকে আলাদা করে আর শহরে যেতে হবে না।

কেওনঝর ও তার আশপাশ কিভাবে ঘুরবেন

আমরা যার গাড়িতে কেওনঝর ঘুরেছি নাম সোনু।

ফোন নং :- 9438540833

(১) আমরা যেভাবে ঘুরেছি

প্রথমদিন : স্টেশন থেকে কেওনঝর আসার পথেই সকাল সকাল তারাতারিণী মায়ের দর্শন করে, হোটেলে পৌঁছে একটু দুপুর দুপুর বেরিয়ে কেওনঝরের কাছাকাছি জায়গাগুলো দেখে নিয়েছি। সানা ঘাগড়া, বড়া ঘাগড়া, বড়া ঘাগড়া বাঁধ। 

দ্বিতীয়দিন : গোনাসিকা, খণ্ডধর জলপ্রপাত।

তৃতীয়দিন : সীতাবিঞ্জি, গুন্ডিচাঘাগী জলপ্রপাত, ভীমকুন্ড, কানঝারি বাঁধ। 

(২) এভাবেও ঘোরা যায়

 প্রথমদিন জাজপুর পৌঁছে তারাতারিণী মন্দির, গুন্ডিচাঘাগী জলপ্রপাত, ভীমকুন্ড, কানঝারি ড্যাম ঘুরে হোটেল পৌঁছতে বিকেল হয়ে যাবে।

দ্বিতীয়দিন গোনাসিকা/কাঞ্জিপানি ঘাঁটি ((সময় থাকলে দুটোই ), খন্ডধর জলপ্রপাত, 

সানা ঘাগড়া, বড়া ঘাগড়া, বড়া ঘাগড়া ড্যাম।

কেওনঝর ঘোরার জন্য পুরো দুটো দিন প্রয়োজন। জাজপুর দিয়ে পৌঁছে বরবিল দিয়ে ফেরা যায়। অথবা উল্টোভাবে। আমরা জাজপুর দিয়েই যাওয়া-আসা করেছি।

(৩) সময়ের অভাবে শুধুমাত্র সানা ঘাগড়া, বড়া ঘাগড়া, বড়া ঘাগড়া ড্যাম আর খন্ডধর দেখলেও দুদিনের আরামদায়ক কেওনঝড় ভ্রমণ হতে পারে।

প্রথমদিন জাজপুর থেকে কেওনঝর আসার সময় তারাতারিণী মন্দির ও গুন্ডিচাঘাগী জলপ্রপাত দেখে হোটেল। 

দ্বিতীয়দিন খন্ডধর জলপ্রপাত ও কাঞ্জিপানি ঘাঁটি দেখে সানা ঘাগড়া, বড়া ঘাগড়া, বড়া ঘাগড়া ড্যাম।

সানা ঘাগড়া আর বড়া ঘাগড়া ছাড়া কোনটাই কিন্তু কেওনঝরের সাইড-সিইং নয়। একটা জায়গা থেকে আর একটা জায়গার দূরত্ব অনেকটা করে, সেটা কিন্তু মাথায় রাখতে হবে পরিকল্পনা করার সময়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন